ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হোসেন মো. মজুমদার । তিনি বলেন, শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন মালিক সমিতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত যেখানে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমিয়েছে সেখানে বাংলাদেশে শতকরা ২৩ ভাগ মূল্য বাড়িয়ে একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে আমাদের পরিবহন চালানো সম্ভব নয়। হুট করে এই ধরনের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই । পরিবহন মালিক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় পণ্য পরিবহনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আজই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর হতে যাচ্ছে।
এর আগে, বুধবার (৩ নভেম্বর) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় ‘লোকসান কমাতে’ দেশের বাজারেও এই জ্বালানির তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান । বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়মিত সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য প্রতি লিটার ১২৪.৪১ টাকা বা ১০১.৫৬ রুপি ছিল। অথচ বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ লিটার প্রতি ৫৯.৪১ টাকা কম। বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটারপ্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রয় করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বর্তমান মূল্যে সরবরাহ করায় মোট ৭২৬.৭১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে পরিবহন খরচ, হোটেল-রেস্তোরার খাবার এবং তৈরি খাবারের দাম বাড়তে পারে । একই সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে বাড়তে থাকা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলবে।
Leave a Reply